নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
আর মাত্র একদিন বাকি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। নির্বাচনের মাঠে সরব উপস্থিতি না দেখা গেলেও ঐক্যফ্রন্টের নামে বিএনপি-জামায়তের নেংটি ইঁদুরেরা মাঠে খুব সক্রিয় হয়ে উঠেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নামে তার তলে তলে মাটির নীচে সুড়ঙ্গ কেটে ফেলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব সুড়ঙ্গ দিয়ে যাচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকার বান্ডিল, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে। প্রায় শতাধিক আসনকে টার্গেট করে মাঠে নেমেছে তারা। ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে রাখছে যোগাযোগ। টাকায় কেনে বেচা হচ্ছে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট চুনোপুঁটিসহ রথি-মহারথীরা। এর তালিকায় মনোনয়ন বঞ্চিত কানয়লীগ, বিভিন্ন সময়ে বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে এসে পদ দখল করা নব্য আওয়ামী লীগরা অনেকেই আছেন। তাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশলের কথা কয়েক মিনিটেই পৌঁছে যাচ্ছে লন্ডনে, আছে পরবর্তী নির্দেশ, বিএনপি’র একাধিক সূত্রে এমন দাবি করেছে।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া, খুলনা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশহী এলাকার প্রায় শতাধিক আসনকে এই পরিকল্পনার আওতায় আনা হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী ২ জন বিএনপি নেতা নিজের এলাকা ছেড়ে ঢাকা ফিরে এসে উচ্ছসিত হয়ে জানিয়েছেন যে, ২০০১ স্টাইলে নির্বাচনের আগের রাতেই বিএনপি যাতে জিতে যায় তার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিকল্পনা ঠিক থাকলে আর তা পরিপূর্ণ বা আংশিক বাস্তবায়ন করা গেলে বিএনপি আশানারুপ ফল পাবে বলে বিশ্বাস করে। বিএনপি’র বাঘা বাঘা নেতা যাদের টাকা পয়সা কম আছে তাঁদের মনোনয়ন বঞ্চিত করে এই অঢেল টাকার সংস্থান করা হয়েছে। জামায়াতের টাকার ভান্ডার তুলে দেওয়া হয়েছে বিএনপি’র লন্ডনী নেতার হাতে। নির্বাচনে জয়ের এই কৌশলের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে অনেক নেতাকে কনভিন্স করা গেলেও কেউ কেউ কনভিন্স হননি। যারা এটা মেনে নিতে পারেননি তেমন একাধিক সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই মাঠে অনুপস্থিত থেকেও সরকার গঠনের স্বপ্নে বিভোর ড. কামাল-মান্না-রব-ফখরুলরা হুংকার দিয়ে বলছেন যে তারা মাঠ ছাড়বেন না।
জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মসজিদ মাদ্রাসায় তাবলিগ জামায়তের নামে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও নির্বাচনের আগে এলাকায় ফিরে এসে নির্বাচনের কাজে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনায় আছে। যাদের গায়ে দলের তকমা তেমন নেই এমন জামায়াত-শিবির কর্মীরা এবার মরণপণ লড়াইয়ে নামবে মুরুব্বিদের নির্দেশে। পরিকল্পনা আংশিক সফল হলে অন্য আরেকটি পরিকল্পনা নেওয়া আছে। সেক্ষেত্রে যে সব এলাকায় বিএনপির প্রভাব খুব কম, সে সব এলাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে জাতীয় পার্টি একটা ভালো সংখ্যক আসনে জয়লাভ করে। তখন পূর্ব সমঝোতা অনুযায়ী এরশাদ সাহেবের সাথে নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের পরাজয় বা পতন নিশ্চিত করা যাবে। এটাই বলা হবে সরকারের বিপক্ষে জনগনের ভোট বিপ্লব।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, কুমিল্লা আর মুন্সীগঞ্জের একাধিক আসনে এমন খবর বাংলাদেশ সরকারের গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে। ভোট কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার নামে কেন্দ্রের বাইরে গোলযোগের সম্ভাবনা তৈরী করে ২০০১ স্টাইলে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের শক্ত-পোক্ত পরিকল্পনা নিয়েছে ঐক্যফ্রন্টের বোরকার আড়ালে বিএনপি-জামায়াত। যাতে একটা অপ্রত্যাশিত জয় আসে সেই হিসেব বুঝানো আর পলিটিক্যাল কনসালটেন্সির টাকার চাপে ড. কামাল হোসেনকে এত বেপরোয়া মারমুখী রুপে দেখা যাচ্ছে বলে বিএনপি সূত্রে জানানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারলে সিলেট স্টাইলে ভোট কারচুপির অভিযোগ চালয়ে যাবে। আর তা না হলে শেষ মুহূর্তে বিক্ষিপ্ত বা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করতেও পারে বলে বিএনপি’র ঐ সূত্রে দাবি করা হয়।
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।